Loading
আবারও মেঘমুক্ত আকাশে সৌন্দর্য মেলে ধরতে শুরু করেছে হিমালয়ের দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা। পর্বতশৃঙ্গটির মোহনীয় সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রয়োজন নেই পাসপোর্ট-ভিসা করে দেশের বাইরে যাওয়ার। উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েক দিন ধরেই দেখা মিলছে পর্বতচূড়াটির। তবে বুধবার এ বছরের মধ্যে সবচেয়ে পরিষ্কার ও ঝকঝকে মূর্তি দেখা গেল।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেবল মেঘমুক্ত ও কুয়াশামুক্ত গাঢ় নীল আকাশ থাকলেই দেখা দেয় হিমালয়ের এই পর্বতশৃঙ্গ। বুধবার ছিল তেমনি একটি দিন। ভোর থেকে দিনের পুরো সময়জুড়ে দেখা মেলে পর্বতশৃঙ্গটির। ভোরের আলো ফুটতেই তা গিয়ে পড়ে ঠিক কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায়।
এদিকে চারপাশে তখনো আবছা অন্ধকার থাকলেও চকচক করে চূড়াটি। ভোরের আলোয় পর্বতচূড়াটি পোড়া মাটির রং নেয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা ঝাপসা হয়ে আসে। তখন রং হয় সাদা।
দূর থেকে মনে হয় এ যেন আকাশের গায়ে এক খণ্ড বরফ। কখনো মনে হয় মেঘের টুকরা। পর্বতচূড়াটির নিচ দিয়ে কালো রঙে দার্জিলিংয়ের পাহাড়ি এলাকা দেখা যায়। সূর্যের আলোর সঙ্গে সঙ্গে রং বদল করে এই পর্বতচূড়া। তবে কাঞ্চনজঙ্ঘা উপভোগ করার মোক্ষম সময় হলো ভোর ও পড়ন্ত বিকেল।
অক্টোবর ও নভেম্বরের বেশির ভাগ সময় আবহাওয়া ভালো থাকলে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়।
মাউন্ট এভারেস্ট ও কে-২-এর পরই কাঞ্চনজঙ্ঘার অবস্থান। পর্বতচূড়াটির কিছু অংশ ভারতের সিকিম এবং কিছু অংশ নেপালে অবস্থিত। মনোমুগ্ধকর এই পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সামর্থ্যবানরা ছুটে যান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলা শহরের টাইগার হিলে। দার্জিলিংয়ের টাইগার হিলই কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া দেখার সবচেয়ে আদর্শ জায়গা। আবার কেউ কেউ যান সান্দাকপু বা ফালুট। আবার কেউ কেউ সরাসরি নেপালে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। কিন্তু ঘরোয়া পরিবেশে নিজের মতো করে দেখার সুযোগ কেবল পঞ্চগড় থেকেই মেলে।
বগুড়া থেকে আসা মাসুমা আক্তার বলেন, ‘ফেসবুক ও টিভিতে কেবল নিউজে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখেছি। বাস্তবে এই প্রথম দেখার সুযোগ হলো তেঁতুলিয়ায় এসে। টিভির চেয়ে সরাসরি আরো সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করলাম। মনে হচ্ছে সারা দিন ঘুরে এই দৃশ্য উপভোগ করি।’
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘হেমন্তের এই সময়ে পরিষ্কার আকাশে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মেলে। কাঞ্চনজঙ্ঘাকে ঘিরে আমাদের পর্যটন এলাকাগুলো সরব হয়ে ওঠে। আমরা তেঁতুলিয়া ডাকবাংলোসহ পর্যটন এলাকাগুলো উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। শুধু কাঞ্চনজঙ্ঘা নয়, সমতলের চা-বাগান, মুক্তাঞ্চল পার্ক, মহারাজার দিঘি, পাথরের জাদুঘর, মির্জাপুর শাহী মসজিদ, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট ও বোদেশ্বরী পীঠ মন্দিরসহ অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। প্রকৃতিপ্রেমীরা কাঞ্চনজঙ্ঘার পাশাপাশি নির্বিঘ্নে এসব স্থান ঘুরে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।’