১১ নভেম্বর, ২০২৪

তীব্র শীতেও ধামইরহাটের নারীরা ফসলের মাঠে



নওগাঁর ধামইরহাটে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার মধ্যেও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী কৃষি শ্রমিকরা পানিতে নেমে বোরো ধান রোপণ করছেন। শীতের কারণে সাধারণ মানুষের জনজীবন যেখানে স্থবির হয়ে পড়েছে, সেখানে কৃষি শ্রমিকরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এবার এ উপজেলায় ১৮ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে উপজেলার সর্বত্র প্রচণ্ড শৈত্যপ্রবাহ চলছে।

বেশির ভাগ সময় সূর্যের মুখ দেখা যায় না। 
বুধবার সকালে তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে মাঠে মাঠে নারী ও পুরুষ কৃষি শ্রমিকরা কাজ করছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, নিচু জমিতে বোরো ধান রোপণ শুরু হয়েছে গত এক সপ্তাহ আগে।

নদীতীরবর্তী ও বিল জমিতে কৃষকরা আগাম চাষাবাদ শুরু করেছেন। ধামইরহাট পৌরসভার ঢেপুপাড়ার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী কৃষি শ্রমিক ববিতা উড়াও বলেন, ‘অনেক শীতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাদা ও পানিতে নেমে কাজ করতে হচ্ছে। কেউ আমাদের খোঁজ রাখে না। কম্বল পেলে অনেক উপকার হতো।

হাটনগর গ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারী শ্রমিক মিনতী পাহান অনেকটা অভিযোগের সুরে বলেন, ‘মাঠে আমরা পুরুষের সমান কাজ করলেও নারী হওয়ায় মজুরি কম পাই। পুরুষরা পাঁচ শ টাকা পেলে নারীরা পায় তিন শ টাকা। মানুষ যখন জবুথবু হয়ে পড়েছে তখন প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে পেটের দায়ে আমাদের খোলা মাঠে কাজ করতে হচ্ছে।’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. তৌফিক আল জুবায়ের বলেন, ‘গত আমন মৌসুমে কৃষকরা ধানের দাম বেশি পেয়ে বোরো ধান চাষে ঝুঁকে পড়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো ধান রোপণের সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বোরো ধান চাষে কৃষকদের সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, এরই মধ্যে প্রণোদনার আওতায় চার হাজার ৯০০ কৃষককে ৩৩ শতাংশ জমির জন্য ১০ কেজি ডিএপি, ১০ কেজি পটাশ, পাঁচ কেজি উচ্চ ফলনশীল বোরো ধানবীজ বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া তিন হাজার ৭০০ কৃষককে দুই কেজি করে হাইব্রিড বোরো ধানের বীজ বিনা মূল্যে প্রদান করা হয়েছে। কোনো জায়গা যেন পতিত না থাকে সে ব্যাপারে কৃষি বিভাগ সজাগ রয়েছে। বোরো ধানের প্রয়োজনীয় সার এরই মধ্যে ডিলারের কাছে মজুদ রয়েছে। সারের কোনো সংকট হবে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. আসমা খাতুন বলেন, ‘উপজেলার আটটি ইউনিয়নের সরকারি বরাদ্দকৃত কম্বল চেয়ারম্যানদের অনুকূলে বিতরণ করা হয়েছে। তার পরও কেউ কম্বল না পেয়ে থাকলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের কম্বল প্রদান করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
 

author

নিউজ ডেস্ক (৪৮)